পণ্যের গুণগত মান (কোয়ালিটি) কিভাবে ম্যানেজ করবেন?
১.কোয়ালিটির পরিকল্পনা
পণ্যের কোয়ালিটি পরিকল্পনা মূলত পণ্যটি যাতে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কাজগুলোকে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার একটা প্রক্রিয়া।এই কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত সকলে যাতে তার কাজ সময়মতো শেষ করতে পারে সে জন্য তাদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগটাকে আরো কার্যকর করাই এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য। আর কার্যকর পণ্য পরিকল্পনা নির্ভর করে ঐ প্রতিষ্ঠানের টপ ম্যানেজমেন্ট ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জনে কতটুকু আন্তরিক, বদ্ধপরিকর তার উপর।
২.মান নিয়ন্ত্রন
পণ্যের মান নিয়ন্ত্রন বলতে উৎপাদক পণ্য উৎপাদনের আগে যে মান নির্দিষ্ট করেছেন উৎপাদনের প্রিতিটি পর্যায়ে সেই মান বজায় রাখা হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করাকে বুঝায়।যদি কোনো জায়গায় কোন বিচ্যুতি হয় সেটা কিভাবে ধরা পড়বে এবং সেই বিচ্যুতি কিভাবে নিরসন করা হবে সেটাও আগে থেকেই ঠিক করে রাখতে হবে। এখন অবশ্য অনেক সেক্টরেই অটোমেটেড মেশিনারিজ ব্যবহৃত হচ্ছে যেখানে ন্যূনতম বিচ্যুতি ছাড়াই পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
৩.গুনগত মানের নিশ্চয়তা
অনেক সময় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ আর মানের নিশ্চয়তা একই অর্থে ব্যবহার করা হয়।তবে একটু সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হলে পণ্যের মানের সিস্টেমেটিক পরিমাপ,স্ট্যান্ডার্ডের সাথে উৎপাদিত পণ্যের মান মিলিয়ে দেখা এবং পুরো প্রক্রিয়াটা মনিটর করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। গুণগত মান নিশ্চিতকরণে দুটি নীতি খুব মনোযোগের সাথে পালন করতে হয়। একটি হলো “ফিট ফর পারপাস”, মানে যে উদ্দেশ্যে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে উৎপাদিত পণ্যের মান সেই উদ্দেশ্য সাধন করবে। আর দ্বিতীয়টি হলো “রাইট ফার্স্ট টাইম”, মানে পণ্য উৎপাদনের সময় প্রথমবারেই যাতে সুনির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পণ্যের মান বজায় রাখা যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। কারণ দ্বিতীয়বার কোনো পরিবর্তন আনতে গেলে অতিরিক্ত খরচ হবে যা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেবে।
৪.গুণগতমানের উন্নয়ন
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গেলে ক্রেতার কাঙ্ক্ষিত মানের পণ্য উৎপাদন করতে হয়। ক্রেতার সবসময় আরো ভালো মানের পণ্য চায়। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে ক্রেতার কাঙ্ক্ষিত মানে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খেয়ে চলার জন্য প্রয়োজন পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নের একটা ডাইনামিক ব্যবস্থা রাখা। পণ্য উৎপাদনে ভুলগুলো ট্র্যাক রাখা, উৎপাদনের সাথে জড়িত কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এগুলো পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাছাড়া একটা কোয়ালিটি সার্কেলের ব্যবস্থা করা যায় যেখানে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে এবং তাদের পণ্যের এবং পণ্য তৈরির পদ্ধতির ডিফেক্ট খুঁজে বের করবে।